পাশ্চাত্য যখনই প্রাচ্যের কোন নৃগোষ্ঠীর উথানের সম্ভাবনা নিয়ে চিন্তা করে তখনই তার মনে একটা ভয়ের সঞ্চার হয়। ভয়ের কারণ হলো পাশ্চাত্য যে শক্তি দ্বারা চালিত তা একটি অশুভ শক্তি। যতক্ষণ এই অশুভ শক্তিকে পাশ্চত্য নিজের পাশে রাখতে পারে ততক্ষন সে নিজে বিপদমুক্ত থাকে এবং জগতের অন্যান্য জাতিগুলো তার ভয়ে কাপতে থাকে। ইউরোপের বর্তমান সভ্যতার মুখ্য উচ্চাশা হল শয়তানকে একচ্ছত্র হিসাবে নিজের পক্ষে রাখা। শুধু এই একটি উদ্দেশ্যেই তার সকল অস্ত্রশস্ত্র ও কূটনীতি গড়ে তোলার প্রয়াস। কিন্তু অশুভ শক্তিকে আহ্বান করার সমস্ত ব্যয়সাপেক্ষ ক্রিয়াকর্ম যে জাগতিক বৈভবের পথ ধরে চলে তা শেষ পর্যন্ত চরম বিনাশের কিনারে এসে পৌছয়। ইশ্বরের পৃথিবীতে পাশ্চত্য যে সন্ত্রাসের উন্মত্ততা নিয়ে এসেছে তা তাকেই গ্রাস করার জন্য ফিরে এসেছে এবং আরো বড় আকারের ভয়াবহ অবস্থার প্রস্তুতি নিতে তাকে বাধ্য করছে। এর ফলে সে কোন বিশ্রাম পায় না। অপরের প্রতি ধংস যে নিয়ে আসে এবং সেইসংঙ্গে নিজের ধংসও সে ডেকে আনে। সেটা ছাড়া আর সবকিছুই সে ভুলে যায়। রাজনীতির শয়তানের উপসনা করতে গিয়ে পাশ্চাত্য অন্য জাতিগুলোকে বলি দেয়। পাশ্চাত্য তাদের মৃতমাংস খেয়ে বলবৃদ্ধি করে নিজে স্ফীত হয়ে ওঠে যতদিন পর্যন্ত মৃতদেহগুলো খাদ্য হিসেবে গ্রহণযোগ্য থাকে। কিন্ত অবধারিতভাবে সেগুলো পঁচে যায়, চারদিক দূষিত হয় এবং খাদ্য সরবরাহকারীর প্রাণশক্তি বিষদুষ্ট করে।
– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
Reviews
There are no reviews yet.