“বরফ গলা নদী” বইটির প্রথম দিকের কিছু কথাঃ
উত্তরের জানালাটা ধীরে ধীরে খুলে দিলো লিলি। একঝলক দমকা বাতাস ছুটে এসে আলিঙ্গন করলো তাকে। শাড়ির আঁচলটা কাঁধ থেকে খসে পড়লো হাতের উপর। নিকষ কালো চুলগুলো ঢেউ খেলে গেলো। কানের দুলজোড়া দোলনের মতো দুলে উঠলো। নীলরঙের পর্দাটা দু-হাতে টেনে দিলো সে। তারপর বইয়ের ছোট আলমারিটার পাশে, যেখানে পরিপাটি করে বিছানো বিছানার ওপর দু-হাত মাথার নিচে দিয়ে মাহমুদ নীরবে শুয়ে, সেখানে এসে দাঁড়ালো লিলি। আস্তে করে বসলো তার পাশে। ওর দিকে ক্ষণকাল তাকিয়ে থেকে মাহমুদ বলল, আমি যদি মারা যেতাম তাহলে তুমি কী করতে লিলি ?
আবার সে কথা ভাবছো? ওর কণ্ঠে ধমকের সুর। মাহমুদ আবার বলল, বলো না, তুমি কী করতে ? কাঁদতাম। হলো তো ? একটু নড়েচড়ে বসলো লিলি। হাত বাড়িয়ে মাহমুদের চোখজোড়া বন্ধ করে দিয়ে বলল, তুমি ঘুমোও। প্লিজ ঘুমোও এবার। নইলে শরীর খারাপ হয়ে যাবে যে। আজ ক-রাত ঘুমোওনি সে খেয়াল আছে ?
মাহমুদ মুখের ওপর থেকে হাতখানা সরিয়ে দিলো ওর, কী বললে, লিলি ! তুমি কাঁদতে তাই না ? না, কাঁদবো কেন, হাসতাম। কপট রাগে মুখ কালো করলো লিলি। তারপর উঠে দাঁড়িয়ে পাকঘরের দিকে চলে গেলো সে। মাহমুদ নাম ধরে বারকয়েক ডাকলো, কিন্তু কোনো সাড়া পেলো না। পাকঘর থেকে থালা-বাসন নাড়ার শব্দ শোনা গেলো। বোধ হয় চুলোয় আঁচ দিতে গেছে লিলি। চোখজোড়া বন্ধ করে ঘুমোতে চেষ্টা করলো সে। ঘুম এলো না। বারবার সেই ভয়াবহ ছবিটা ভেসে উঠতে লাগলো ওর স্মৃতির পর্দায়। যেন সবকিছু দেখতে পাচ্ছে সে। সবার গলার স্বর শুনতে পাচ্ছে। মা ডাকছেন তাকে—মাহমুদ বাবা, বেলা হয়ে গেলো ৷ বাজারটা করে আন তাড়াতাড়ি।
চমকে উঠে চোখ মেলে তাকালো সে। সমস্ত শরীর শিরশির করে কাঁপছে তার। বুকটা দুরুদুরু করছে। ভয় পেয়েছে মাহমুদ। তবু আশেপাশে একবার তাকালো সে। মাকে যদি দেখা যায়। কিন্তু কেউ তার নজরে এলো না। এলো একটা আরশুলা, বইয়ের আলমারিটার ওপর নিশ্চিন্তে হেঁটে বেড়াচ্ছে সেটা। তার দিকে একদৃষ্টে চেয়ে রইল মাহমুদ।
একটু পরে পাকঘর থেকে একগ্লাস গরম দুধ হাতে নিয়ে এ ঘরে এলো লিলি। ওকে দেখতে পেয়ে কিছুটা আশ্বস্ত হলো মাহমুদ। একটুকাল নীরব থেকে বললো, আমি মরলাম না কেন, বলতে পারো লিলি ? সে কোনো জবাব দিলো না। বিছানার পাশে গোল টিপয়টার ওপর গ্লাসটা নামিয়ে রাখল। মাহমুদ আবার জিজ্ঞাসা করলো, কই আমার কথার জবাব দিলে না তো ? লিলি বললো, দুধটা খেয়ে নাও, ঠাণ্ডা হয়ে যাবে। আগে আমার প্রশ্নের উত্তর দাও।
উত্তরের জানালাটা ধীরে ধীরে খুলে দিলো লিলি। একঝলক দমকা বাতাস ছুটে এসে আলিঙ্গন করলো তাকে। শাড়ির আঁচলটা কাঁধ থেকে খসে পড়লো হাতের উপর। নিকষ কালো চুলগুলো ঢেউ খেলে গেলো। কানের দুলজোড়া দোলনের মতো দুলে উঠলো। নীলরঙের পর্দাটা দু-হাতে টেনে দিলো সে। তারপর বইয়ের ছোট আলমারিটার পাশে, যেখানে পরিপাটি করে বিছানো বিছানার ওপর দু-হাত মাথার নিচে দিয়ে মাহমুদ নীরবে শুয়ে, সেখানে এসে দাঁড়ালো লিলি। আস্তে করে বসলো তার পাশে। ওর দিকে ক্ষণকাল তাকিয়ে থেকে মাহমুদ বলল, আমি যদি মারা যেতাম তাহলে তুমি কী করতে লিলি ?
আবার সে কথা ভাবছো? ওর কণ্ঠে ধমকের সুর। মাহমুদ আবার বলল, বলো না, তুমি কী করতে ? কাঁদতাম। হলো তো ? একটু নড়েচড়ে বসলো লিলি। হাত বাড়িয়ে মাহমুদের চোখজোড়া বন্ধ করে দিয়ে বলল, তুমি ঘুমোও। প্লিজ ঘুমোও এবার। নইলে শরীর খারাপ হয়ে যাবে যে। আজ ক-রাত ঘুমোওনি সে খেয়াল আছে ?
মাহমুদ মুখের ওপর থেকে হাতখানা সরিয়ে দিলো ওর, কী বললে, লিলি ! তুমি কাঁদতে তাই না ? না, কাঁদবো কেন, হাসতাম। কপট রাগে মুখ কালো করলো লিলি। তারপর উঠে দাঁড়িয়ে পাকঘরের দিকে চলে গেলো সে। মাহমুদ নাম ধরে বারকয়েক ডাকলো, কিন্তু কোনো সাড়া পেলো না। পাকঘর থেকে থালা-বাসন নাড়ার শব্দ শোনা গেলো। বোধ হয় চুলোয় আঁচ দিতে গেছে লিলি। চোখজোড়া বন্ধ করে ঘুমোতে চেষ্টা করলো সে। ঘুম এলো না। বারবার সেই ভয়াবহ ছবিটা ভেসে উঠতে লাগলো ওর স্মৃতির পর্দায়। যেন সবকিছু দেখতে পাচ্ছে সে। সবার গলার স্বর শুনতে পাচ্ছে। মা ডাকছেন তাকে—মাহমুদ বাবা, বেলা হয়ে গেলো ৷ বাজারটা করে আন তাড়াতাড়ি।
চমকে উঠে চোখ মেলে তাকালো সে। সমস্ত শরীর শিরশির করে কাঁপছে তার। বুকটা দুরুদুরু করছে। ভয় পেয়েছে মাহমুদ। তবু আশেপাশে একবার তাকালো সে। মাকে যদি দেখা যায়। কিন্তু কেউ তার নজরে এলো না। এলো একটা আরশুলা, বইয়ের আলমারিটার ওপর নিশ্চিন্তে হেঁটে বেড়াচ্ছে সেটা। তার দিকে একদৃষ্টে চেয়ে রইল মাহমুদ।
একটু পরে পাকঘর থেকে একগ্লাস গরম দুধ হাতে নিয়ে এ ঘরে এলো লিলি। ওকে দেখতে পেয়ে কিছুটা আশ্বস্ত হলো মাহমুদ। একটুকাল নীরব থেকে বললো, আমি মরলাম না কেন, বলতে পারো লিলি ? সে কোনো জবাব দিলো না। বিছানার পাশে গোল টিপয়টার ওপর গ্লাসটা নামিয়ে রাখল। মাহমুদ আবার জিজ্ঞাসা করলো, কই আমার কথার জবাব দিলে না তো ? লিলি বললো, দুধটা খেয়ে নাও, ঠাণ্ডা হয়ে যাবে। আগে আমার প্রশ্নের উত্তর দাও।
Reviews
There are no reviews yet.