বইয়ের ভুমিকা
পাঠকের একটি প্রশ্ন আমি অসংখ্যবার শুনেছি। প্রশ্নটা হলো, ‘আমি কখন লেখি?’
দিনের কোন ভাগে? রাতের কোন ভাগে? এই প্রশ্নের উত্তর অনেক খুঁজেছি। খুঁজে উত্তর যা পেলাম, তা হলো- আমি আসলে দিনরাতের কোনো ভাগেই আলাদা সময় নির্দিষ্ট করে লেখিনা। আমি লেখি মূলত প্রবল মন খারাপ বা মন ভালো থাকলে। অর্থাৎ আমার চারপাশের কোনো ঘটনা যখন আমাকে প্রবলভাবে আন্দোলিত করে, উদ্দীপ্ত করে, তখন। আমি যেহেতু প্রচুর লেখি, তার মানে কী এই যে সারাক্ষণই আমার মন ‘প্রবল’ খারাপ কিংবা ভালো থাকে! আর এ কারণেই আমি যখন তখন লিখতেই থাকি?
কথা সত্য। মানুষ হিসেবে আমি প্রচন্ড সংবেদনশীল। ফলে আপাতদৃষ্টিতে ‘উপেক্ষা-যোগ্য’, এমন অনেক ছোটখাট বিষয়েও আমি বিচলিত হই। উপেক্ষা করতে পারি না। হয়তো এ কারণেই সারাক্ষণ সেই অনুভবগুলোকে আমি প্রকাশ করতে চাই।
আজকাল মোবাইল ফোনের কল্যাণে সুবিধা হয়েছে। যেখানে সেখানে যখন তখন লিখে ফেলা যায়। সেই লেখা ফেসবুকের পাতায় রোজ রোজ প্রকাশও করা যায়। অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে, আমার এমন অনেক লেখাই পাঠক তুমুল আগ্রহ নিয়ে পড়েন। তারা তাদের নিজেদের মতো সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করেন। ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু এ কারণে যেটি হয়, লেখাগুলো কোথাও একত্রে সংরক্ষিত থাকে না। বিচ্ছিন্নভাবে নানা নামে, নানা পরিচয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে যায়। হঠাৎ করেই একদিন আমার মনে হলো, সেই লেখাগুলোকে একত্রে সংরক্ষিত করে রাখা দরকার।
সেই ইচ্ছে থেকেই ফেসবুকে বিভিন্ন সময়ে লেখা আমার পংক্তিমালার এই চতুর্থ সংকলন। বিচ্ছিন্নভাবে লেখা পংক্তিগুলোকে মলাটবদ্ধ করতে গিয়ে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সামান্য অসুবিধা হয়েছে। ফলে কোথাও কোথাও দুয়েকটি লেখার পুনরাবৃত্তিও থাকতে পারে। আশা করি সেটি পাঠককে ভালো লাগার অনুভ‚তিই দিবে। কারণ এই পংক্তিগুলোকে আমি বলি অনুভ‚তির আঁখরে লেখা শব্দ ও নৈঃশব্দ্যের গল্প।
সেই গল্প ছুঁয়ে যাক মন ও মানুষ।
Reviews
There are no reviews yet.