সাইরাস

একজন জাতির পিতা, আইনপ্রণেতা ও মুক্তিদাতার জীবন

‘‘সাইরাস”বইটির ভূমিকা:
সাইরাস। পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে প্রভাবশালী চরিত্র। সমসাময়িক পারসিক জাতির কাছে পিতা, গ্রিকদের কাছে আইনপ্রণেতা এবং ব্যাবিলনীয়দের কাছে মুক্তিদাতা। একমাত্র অইহুদি তিনি, যাকে ইহুদি ধর্মবিশ্বাস মেসায়াহ আসনে অধিষ্ঠিত করেছে। আধুনিক মুসলিম তাফসির বিশারদরা কোরআনে বর্ণিত যুলকারনাইন হিসেবে উপস্থাপন করতে চান তাকে। বিশ্ববিজেতা আলেকজান্ডার, জুলিয়াস সিজার এবং লরেন্স অব অ্যারাবিয়া তার থেকে নিয়েছেন অনুপ্রেরণা। থমাস জেফারসন, ডেভিড ভেন গুরিয়ন কিংবা রেজা শাহ পাহলভিদের মতাে অনেকের জন্য তিনি আদর্শ। সাইরাস হিসেবে পরিচিতি পেলেও নামের প্রকৃত উচ্চারণ কুরুশ। তিনি এত দূর সাম্রাজ্য বিস্তার করেছেন, যা তার আগের পৃথিবী দেখেনি। যদি গণতন্ত্রের জনক তকমাটা গ্রিকদের দেওয়া হয়, তবে সাইরাসকে বলতে হবে বিশ্বায়নের জনক। তিনি ভূখণ্ড জয় করেননি, করেছেন সেখানকার নাগরিকদের। অগণিত জাতি, ভাষা আর ধর্মবিশ্বাসের মানুষ এসেছিল একই ছাতার নিচে। চলেছে ন্যায়বিচারের চর্চা। যুদ্ধ হয়েছে, অথচ বন্দী শত্রুকে প্রতিশােধের খায়েশে উন্মত্ত হয়ে হত্যা করা হয়নি। দেওয়া হয়েছে সম্মান এবং মর্যাদা। স্থাপন করেছেন মুক্তি আর উদারতার নয়া অধ্যায়। এটি কত বড় বিপ্লব, তা স্পষ্ট বােঝা যাবে খ্রিষ্টপূর্ব ৯১১-৬১২ অব্দের আসিরীয়দের তাণ্ডবের ইতিহাস পড়লে। যখন শাসক মানেই খােদা আর প্রজা মানেই দাস। বর্তমানে ফ্যাসিবাদ আর মানবিক অধিকারের খেয়ানতের যুগ চলছে। যেন সেই আসিরীয় আর ব্যাবিলনীয়দের দিগন্তভেদী নৃত্য। যেখানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা অবরুদ্ধ হয়ে যায় কেবল আদর্শিক ভিন্নতার দোষে। সেই সময়ে দাঁড়িয়ে আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে সাইরাসের জীবন।

Reviews

There are no reviews yet.

Be the first to review “সাইরাস”

Your email address will not be published. Required fields are marked *