এই বইটি আদতে ক্রিকেট লিটারেচার লিখবার একটি প্রয়াস; সেপ্রয়াসে কতখানি সফল বা ব্যর্থ হয়েছি সেব্যাপারে ব্যক্তিগতভাবে কিছুটা সংশয়ী বলেই বইয়ের নাম বেনিফিট অব ডাউট। বইয়ে দুই ধরনের নিবন্ধ আছে; একটি ধরনে ক্রিকেটের সাইকোলজিকাল ও সোশ্যাল ইস্যুগুলো আলোচিত হয়েছে। অপরটিতে চিঠি ফরম্যাট অনুসৃত হয়েছে, যেখানে চিঠির মাধ্যমে ক্রিকেট খেলোয়াড়, আম্পায়ার, ধারাভাষ্যকার, ক্রিকেট প্রশাসকদের জীবনি, কার্যক্রম, অর্জন, ক্রিকেটে অবদান প্রভৃতি বিষয়াদির প্রতি দৃষ্টিপাত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মোট ১১টি তাত্ত্বিক নিবন্ধ এবং ১২টি চিঠির সন্নিবেশ ঘটেছে এ বইয়ে। বাংলাদেশ ক্রিকেটের উত্থানপর্ব, ক্রিকেট খেলা মানুষ কেন দেখে- দেশাত্মবোধকে ক্রিকেটের সাথে মিশিয়ে ফেলার ক্ষতিকারিতা, বিভিন্ন দেশের ক্রিকেট সংস্কৃতি- সমর্থকদের আচরণ ও গুণগত মান, বিগত ২০ বছরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট, বাংলাদেশে ক্রিকেটকে ক্যারিয়ার হিসেবে নেয়ার চিন্তা করার মতো পর্যাপ্ত অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে কিনা; এক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাগুলো কী কী, ক্রিকেটের বিশ্বায়ন কেন জরুরী- টেস্ট ক্রিকেট এই বিশ্বায়নের পথে বাধা কিনা, ম্যাচ ফিক্সিংয়ের জন্য আজীবনের নিষেধাজ্ঞা মানবিক সিদ্ধান্ত কিনা- ম্যাচ ফিক্সিংয়ে শাস্তিপ্রাপ্ত ক্রিকেটারকে পুনরায় খেলতে দেয়ার যৌক্তিকতা, অধিনায়কত্বের কলাকৌশল ও রাজনৈতিক এসেন্স, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য কিছু পারফরম্যান্স বিচার, একজন গড় ক্রিকেটারের সাইকোলজি প্রভৃতি বিষয়গুলো দিয়েই সাজানো হয়েছে নিবন্ধ অংশ। চিঠি অংশে প্রাপক তালিকায় আছেন শচীন টেন্ডুলকার- শেন ওয়ার্ন, ডেভিড শেফার্ড- স্টিভ বাকনার, টনি গ্রেগ- মাইকেল হোল্ডিং, এডাম গিলক্রিস্ট- কুমার সাঙ্গাকার- মহেন্দ্র সিং ধোনি, শোয়েব আখতার- কেভিন পিটারসেন- হার্শেল গিবস, রাহুল দ্রাবিড়- শিবনারায়ণ চন্দরপাল- স্টুয়ার্ট ম্যাকগিল, কেরি প্যাকার- এন শ্রীনিবাসন, ওয়াকার ইউনিস- ব্রেট লি, আকরাম খান- মোহাম্মদ রফিক, আশরাফুল- হ্যান্সি ক্রনিয়ে, সনাথ জয়াসুরিয়া- ক্রিস গেইল এবং ব্রায়ান লারা- জ্যাক ক্যালিস।

নিবন্ধের শুরুতে ‘টস’ নামে একটি অংশ আছে যেখানে কেস স্টাডির মাধ্যমে নিবন্ধটি লিখবার যৌক্তিকতা তুলে ধরা হয়েছে। সকল লেখায় কেন্দ্রীয় চরিত্র হিসেবে ‘পিচ’ এর উপস্থিতি লেখাগুলোকে ভিন্নমাত্রা দেবার উদ্দেশ্যে। এই পিচ মূলত লেখকের ব্যক্তিগত দর্শনের প্রতিচ্ছবি। বাংলা ভাষার ক্রিকেট বইগুলো যেখানে কলাম লেখার সংকলন অথবা তারকা ক্রিকেটারের জীবনচরিত হয়ে থাকে, সেখানে এতো ব্যাপক বিষয়বস্তু এবং কিছুটা ব্যতিক্রমী গঠনবৈশিষ্ট্যের সমণ্বয়ে ক্রিকেটের মৌলিক বই লেখার উদ্যোগ বস্তুত ক্রিকেটের প্রতি গভীর ভালোবাসারই বহিঃপ্রকাশ। ক্রিকেটে আগ্রহী মানুষজনের কাছে সেই ভালোবাসা গ্রহণযোগ্যতা পেলেই এই বইয়ের চূড়ান্ত সার্থকতা অর্জিত হবে।

Reviews

There are no reviews yet.

Be the first to review “বেনিফিট অব দা ডাউট”

Your email address will not be published. Required fields are marked *