Look Inside

মুখোশের আড়ালে

৳ 384

রাস্তার মাঝখানে একটা বিশাল জটলা বেঁধেছে। অনেক মানুষ একসাথে জড়ো হয়েছে। সবাই যেন একজন আরেকজনকে কিছু বলছে। এত মানুষ একজায়গায়, তাও এই সময়ে। এই সময়টাতে রাস্তায় জটলা মানেই কোন জায়গায় যেতে বিলম্ব হয়ে যাওয়া। আচ্ছা, দিনে দিনে মানুষের বিচার-বুদ্ধি কি কমে যাচ্ছে! অনেকক্ষণ রুপরেখা রাস্তার এই জ্যামে প্রায় পঁচিশ মিনিট আটকে ছিল। অফিসে দেরি হয়ে যাচ্ছে, খুব মেজাজ খারাপ হচ্ছিল। রুপরেখা এবার সি এন জি থেকে নেমে এসে নিজেই জটলার কাছে এগিয়ে গেল। দেখল একজন মানুষ মাটিতে পড়ে আছে। রাস্তা দিয়ে র****—ক্ত ভেসে যাচ্ছে। রুপরেখা নাকের কাছে হাত দিয়ে দেখল, শ্বাস-প্রশ্বাস আসে কিনা? না, নেই। আরে, এ যে দেখি খু***—ন। বুকের কাছে কাটা কিছু অংশ দেখে মনেই হচ্ছিল, মনে হয় বেঁ*****—চে নেই। আর উৎসুক জনতা দাঁড়িয়ে চেয়ে চেয়ে শুধু দেখছে। এত সকালে যেহেতু লা*****শটা দেখা যাচ্ছে, তাজা র***-**ক্ত ভেসে যাচ্ছে। তাহলে খু****–নটা কি রাতেই হল? অবশ্য না জেনে কিছু বলা ঠিক হবে না। হায়রে মানুষের নিয়তি, জীবিত থাকলে মানুষ বলা হয়, নাম ধরে ডাকা হয়, আর এই জীবনটা বের হয়ে গেলেই বুঝি লা****–শ হয়ে যায়। আচ্ছা, কেউ কি পুলিশে খবর দিয়েছে? সবাই শুধু জটলা পাকিয়ে শোরগোল করতে ব্যস্ত। রুপরেখা এবার ব্যস্ত হয়ে বলে ওঠে, “কেউ কি পুলিশে খবর দিয়েছেন?”
সবাই নিশ্চুপ। কেউ কেউ তো মোবাইলে ভিডিও ধারণ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। রুপরেখা লাশের খুব কাছে গিয়ে বসল আর ভালো করে দেখতে থাকল সবকিছু। কোনকিছু হাত দিয়ে দেখার আগে চিন্তা করল, পুলিশকে আগে খবর দেয়া দরকার। রুপরেখা ফোন করে মোহাম্মদপুর থানার ওসি রবিনকে জানাল। রবিন, রুপরেখার পূর্ব পরিচিত, রুপরেখার জামাই এর বন্ধু। এর আগের ঘটনায়, অপর্নার মৃ***–ত্যু রহস্য খুঁজে বের করতে রবিন সাহায্য করেছিল। এবার রুপরেখা একটু জোড় গলায় বলল, ‘জানেন তো সবাই, এটা পুলিশ কেস। কিন্তু আপনারা কেউ পুলিশে খবর দেন নাই। যেহেতু পুলিশ কেস, এখানে এইভাবে জটলা না পাকানো ভালো হবে। যে যার কাজে চলে যান।’
একটু ফাঁকা হলে রুপরেখা কয়েকটা ছবি তুলে নেয়। রুপরেখা যে “জাগরণ”পত্রিকার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করে, সেই পত্রিকায় একটা খবর ছাপাবে। পত্রিকায় প্রকাশিত হলে এই লা*****শটার পরিচয়ও পাওয়া যাবে। খুব তাড়াতাড়ি রুপরেখা তার সাথে থাকা নোটবুকে টুকটাক কিছু লিখে রাখে। আরো কিছুক্ষণ অপেক্ষা করল, রবিনের সাথে দেখা করার জন্য।